মাদারীপুরঃ জেলা আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় রোববার (১৩ জুন) সকালে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন এসআই মো. খসরুজ্জামান। পুলিশ বাদী হয়ে মামলার পরে বিভিন্ন স্থান অভিযান চালিয়ে ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় ৯৬ জনকে আসামী করা হয়েছে এজাহার নামীয় হিসেবে। এছাড়াও অজ্ঞাত আছে দুইশ’ থেকে তিনশ’ জন আসামী। গ্রেফতারকৃতদের পাঠানো হয়েছে আদালতে।
সম্প্রতি মাদারীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লা সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান এমপির বাবা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মৌলভী আছমত আলী খানকে নিয়ে কটুক্তি করেছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সাহাবুদ্দিন মোল্লার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে শাজাহান খান গ্রুপের সমর্থকরা।
এরই অংশ হিসেবে শনিবার সকালে সদর উপজেলার কলাবাড়িতে একই স্থানে মানবববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেয় শাজাহান খান গ্রুপ ও বাহাউদ্দিন নাছিম গ্রুপের সাহাবুদ্দিন মোল্লার সমর্থক কর্মীরা। এসময় আওয়ামী লীগের দুইপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের লোকজন ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়লে এক পর্যায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পুলিশ লাঠিচার্জ করার মাধ্যমে উভয়পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় তিন পুলিশসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়ে থাকে। এ সময় উত্তেজিত নেতাকর্মীরা পাশের বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংকের ঘটকচর শাখাসহ বেশ কয়েকটি দোকান ও ঘরবাড়ি ভাংচুর করেছে। পরে পুলিশ খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
এই ঘটনায় বাহাউদ্দিন নাছিম পন্থী নেতা সোহরাব সরদার বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে ৩২ জনকে আসামী করে। শাজাহান খান গ্রুপের পক্ষ থেকেও থানায় অভিযোগ দায়ের করা হবে বলেও জানা গেছে। তবে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এখনো কোন অভিযোগ দায়ের করেনি।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে মাদারীপুরে জেলা আওয়ামী লীগ দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে একটি নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আফম বাহাউদ্দিন নাসিম এবং অপরটির নেতৃত্ব দেন সাবেক
নৌপরিবহন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাদারীপুর-২ আসনের সাংসদ শাজাহান খান। বর্তমান মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লা বাহাউদ্দিন নাসিমের অনুসারী।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম মিঞা জানান, পুলিশের উপর হামলা ও সরকারি কাজে বাঁধা দেয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার ১৩ জনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।